উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত সুরক্ষায় ১৪১ কোটি টাকায় রক্ষা বাঁধ

এম. বেদারুল আলম •

সীমান্ত জনপদ উখিয়া-টেকনাফের চোরাচালান রোধ, সীমান্ত সুরক্ষা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠির সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ১৪১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত হচ্ছে সুরক্ষা বাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড ৬০.৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সুরক্ষা বাঁধ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত কাজ চলমান রয়েছে এবং ২০২০ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি শেষ হবে।

এটি বাস্তবায়ন হলে টেকনাফ-উখিয়ার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধের পাশাপাশি , আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সীমান্ত টহল জোরদার করতে সক্ষম হবে। পর্যটন দ্বার উন্মোচিত হবে। ২ উপজেলার জনগণ বন্যার করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা জানান, সরকার টেকসই উন্নয়নের জন্য দেশে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প অব্যাহত রেখেছে। কক্সবাজার ও ব্যতিক্রম নয়। তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের বাংলাদেশ-মায়ানমার এ সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য উখিয়া-টেকনাফের নাফ নদীর বারাবর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পোল্ডার সমুহে পূর্নবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট থেকে প্রায় ৬০.৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রকল্পটি গত বছরের ২২ ফেব্রয়ারি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এটি শেষ করার জন্য ৩৩ মাস সময় দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ এটি শেষ হবে ২০২০ সালের জুন মাসে। বর্তমানে প্রকল্পটি ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাস্তবায়ন শেষ হয়েছে বলে দাবি নিবার্হী প্রকৌশলীর । প্রকল্পে আরো রয়েছে পানি নিস্কাশন অকবাঠামো ৮টি এবং মেরামত ৪৬টি।

এটি বাস্তাবায়নের উদ্যেশ্য হলো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধকে যাতায়তের উপযোগি করে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সদস্যের টহল জোরদার, নিবিড় পর্যবেক্ষন, টহলের মাধ্যমে রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তা জোরদার নিশ্চিত করণ, ফসলী জমিতে লবনাক্ত পানি প্রবেশ রোধ, ফসলহানি রক্ষা এবং ইয়াবাসহ মাদক চোরাচালান রোধ করা।

গতবছর কাজ শুরু হলেও কাজের অগ্রগতি কম হওয়ার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় বিরাজমান পরিস্থিতির কারনে কাজে বিঘœ ঘটছে। বিদ্যমান পানি ব্যবস্থাপনা অবকাঠামো গুলো পুরাতন হওয়ায় চলমান কাজে সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি নাফ নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়া পুনরায় মেরামত করে কাজ শুরু করতে দেরী হয়েছে। তবে সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় বিজিবির মহাপরিচালক বিজিবির পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়েরসহ স্থানীয় প্রশাসন নানামুখি কার্যক্রম হাতে নেয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন এখন থেকে তরান্বিত হবে বলে আশা করছেন তয়ন কুমার ত্রিপুরা।

মাটি স্বল্পতা, প্রকল্প এলাকায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া প্রকল্প এলাকার বাঁধের উপর পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় কাজে বিঘœ ঘটছে যদিও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে খুটিঁ সরাতে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শহীদ ব্রাদার্স, তমা কনষ্ট্রাকশন, এমএম বিল্ডার্স, লিয়াকত আলী ফার্ম,তাজওয়ার ট্রেড সিস্টেম, রহমান ইন্জিনিয়ারিং এন্ড গিয়াস কনষ্ট্রাকশন। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে উখিয়ার ৫টি এবং টেকনাফের ৬ ইউনিয়নের প্রায় ৬ লাখ মানুষ উপকারভোগির আওতায় আসবে। তবে কাজের মান এবং যথাসময়ে সম্পন্ন হওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে বর্তমান কাজের গতি কম হওয়ার কারনে।